ফেসিয়াল করার পর কি করা উচিত - ফেসিয়াল করার পর করণীয়

প্রিয় পাঠক এই পোস্টটি পড়ে আপনারা জানতে পারবেন ফেসিয়াল করার পর করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে। অনেকেই আছেন বিভিন্ন ধরনের ফেসিয়াল করেন কিন্তু ফেসিয়াল করার পর করণীয়  বিষয় গুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত নন তাদের সুবিধার্থে এই পোস্টে আলোচনা করব ফেসিয়াল করার পর কি করা উচিত, ফেসিয়াল করার পর করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে।  

তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নিন, ফেসিয়াল করার পর কি করা উচিত, ফেসিয়াল করার পর করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ

ফেসিয়াল করার নিয়ম

ফেসিয়াল করার পর কি করা উচিত তা জানার আগে আপনাকে জানতে হবে ফেসিয়াল করার নিয়ম  সম্পর্কে। ফেসিয়াল সঠিক নিয়মে করার পর ফেসিয়াল করার পর কি করা উচিত তা জানা জরুরী।ফেসিয়াল করার বেশ কয়েকটি ধাপ রয়েছে এসব ধাপ অনুসরণ করে আপনি খুব সহজেই ফেসিয়াল করতে পারবেন।ফেসিয়াল করার নিয়ম নিচে আপনাদের সাথে ধাপে ধাপে শেয়ার করা হলো।  

ক্লিনজিংঃ 

ফেসিয়াল করার প্রথম ধাপ হলো ক্লিনজিং।ক্লিনজিং মূলত ত্বক পরিষ্কার করার একটি ধাপ। দুধের মধ্যে একটি তুলো ভিজিয়ে নিয়ে পুরো মুখ, গলা, পিঠ ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের  ক্লিঞ্জিং ক্রীম, ক্লিঞ্জিং অয়েল পাওয়া যায় সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।   

স্টিমিংঃ 

ক্লিনজিং করার পরবর্তী ধাপ হলো স্টিমিং। স্টিমিং হল কুসুম গরম পানির ভাপে কিছুক্ষণ মুখ দিয়ে রাখা। স্টিমিং করার ফলে ত্বকের কোষগুলো খুলে যায় এবং ত্বকের ভেতরকার ময়লা দূর হয়। একটি পাত্রে কুসুম গরম পানি নিন এবং তা থেকে গরম পানির ভাপ মুখে নিন। স্টিমিং করতে না চাইলে একটি তোয়ালে সহনীয় গরম পানিতে ভিজিয়ে হালকা করে মুখের উপর চেপে ধরুন পাঁচ মিনিট। যাদের ত্বক শুষ্ক এবং সংবেদনশীল তারা স্টিমিং করবেন দুই মিনিট। 

স্ক্রাবিংঃ

স্টিমিং করার পর ত্বকের উপর কোন একটির স্ক্রাবার দিয়ে স্ক্রাব করা উচিত। স্ক্রাবিং করার ফলে ত্বকের উপরের ময়লা এবং মরা কোষ উঠে যায়, ব্ল্যাকহেডস দূর হয়। স্ক্রাবিং এর সময় খুব বেশি ত্বক ঘষাঘষি করবেন না। 

ফেসপ্যাক ব্যবহারঃ 

ফেসিয়াল করার চতুর্থ ধাপ হলো ফেসপ্যাক ব্যবহার। আপনার পছন্দ মতন যেকোনো জিনিস দিয়ে আপনি ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারেন আবার ইচ্ছা করলে মার্কেট থেকেও ফেস প্যাক কিনে নিতে পারেন। ফেসিয়াল করার সমস্ত উপাদান একসাথে দিয়ে ফেসিয়াল কিট পাওয়া যায় সেটিও কিনে নিতে পারেন। ফেসপ্যাক টি মুখে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে।এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

টোনিংঃ 

ফেসপ্যাক লাগানোর পরবর্তী ধাপ হলো টোনিং। টোনিং করার ফলে ত্বক ঠান্ডা হয় এবং ত্বকের খুলে যাওয়া পোরস বন্ধ হয়। টোনার হিসেবে রোসবেরি ওয়াটার, রোজ-ওয়াটার, শসার রস ব্যবহার করতে পারেন। একটি তুলোর বল তৈরি করে তাতে টোনার নিয়ে লাগিয়ে রাখুন না শুকানো পর্যন্ত।

ময়েশ্চারাইজিংঃ 

ফেসিয়াল করা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে নিয়ে কোন ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। অ্যালোভেরা ক্রিম এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত ময়েশ্চারাইজার।এছাড়াও বাজারে বিভিন্ন ধরনের ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায়।  

আমরা উপরে ফেসিয়াল করার নিয়ম দেখে নিলাম। নিচে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ফেসিয়াল করার পর করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে। 

ফেসিয়াল করার পর করণীয়

এখন আমরা দেখে নেবো ফেসিয়াল করার পর করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে। উপরে আমরা ফেসিয়াল করার নিয়ম ধাপে ধাপে দেখে নিয়েছি। এখানে ফেসপ্যাক ব্যবহার করেই মূলত ফেসিয়াল হয়ে যায়। এরপরেও আরো কিছু করণীয় বিষয় আছে।ফেসিয়াল করার পর করণীয় বিষয়গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করা হলো। 

  • ফেসিয়াল করার পর করণীয়  ধাপ গুলোর মধ্যে প্রথমটি হলো টোনিং করা। টোনিং করার মূল উদ্দেশ্য হলো ত্বক ঠান্ডা রাখা এবং ত্বকের খুলে যাওয়া পোরস বন্ধ করা। 
  • ফেসিয়াল করার পর করণীয় বিষয় গুলির মধ্যে দ্বিতীয় টি হল ময়েশ্চারাইজিং করা। ফেসিয়াল করার পর ত্বক অনেক সময়ই রুক্ষ শুষ্ক হয়ে যায়। এই শুষ্কতা মেটাতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা হয়। প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে এলোভেরা ব্যবহার করতে পারেন অথবা ময়েশ্চারাইজার হিসেবে অলিভ ওয়েল , আমন্ড ওয়েল অথবা নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন।অথবা আপনার ত্বকের ধরণ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজ ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
  • ফেসিয়াল করার পর আর কোনভাবেই স্টিমিং করা যাবে না।  

ফেসিয়াল করার পর কি করা উচিত

এখন আমরা জেনে নেব ফেসিয়াল করার পর কি করা উচিত সেই সম্পর্কে। অনেকেই মনে করে ফেসিয়াল করলেই মনে হয় ত্বকের সমস্ত সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে কিন্তু বাস্তবে তা নয়। ফেসিয়াল করার পর ঠিকমতো ত্বকের যত্ন এবং কিছু নিয়ম অবলম্বন না করলে ফেসিয়াল করে বরং আরো ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। ফেসিয়াল করার পর কি করা উচিত সেগুলোই এখন জেনে নেব।

ফেসওয়াশ বা সাবান ব্যবহার এড়িয়ে চলুনঃ

ফেসিয়াল করার পর থেকে ন্যূনতম দুই দিন ফেসওয়াশ বা সাবান ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। ফেসিয়াল করলে  ত্বক অনেক পাতলা হয়ে যায়। ফেসিয়াল করার পর ফেসওয়াশ বা সাবান ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। কারণ সাবানে অনেক ক্ষার থাকে।

মেকআপ করবেন নাঃ 

ফেসিয়াল করার পরপরই মেকআপ করাটা উচিত নয়। কেননা নাজুক ত্বকে মেকআপের কারণে ইরিটেশন (Irritation) বা ইনফ্লামেসন (Inflammation) দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যেসব কসমেটিক্স (cosmetics) গুলোতে কৃত্রিম রঙ বা সুগন্ধি দেয়া থাকে সেগুলো ফেসিয়ালের পর একদমই ব্যবহার করা উচিত না। ফেসিয়াল করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোন ধরনের মেকআপ ব্যবহার না করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

স্টিম বা বাষ্প থেকে দূরে থাকুনঃ 

ফেসিয়াল করানোর ঠিক পরেই স্টিম নেবেন না। এমনিতেই ফেসিয়াল করানোর পর ত্বকের লোমকূপ খুলে যায় এমতাবস্থায় স্টিম নিলে ত্বকে র‍্যাশ বেরতে পারে। তা ছাড়া ফেসিয়ালের সময়ে তো যথেষ্ট স্টিমের প্রয়োগ করাই হয়েছে আপনার ত্বকে, অতিরিক্ত স্টিম কিন্তু ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।

আরো পড়ুনঃ কমলা খাবার আশ্চর্যজনক ১৫ টি উপকারিতা

স্ক্রাবিং করবেন নাঃ 

ফেসিয়ালের আগে স্ক্রাবিং করা উচিত যা আমরা উপরে ধাপে ধাপে দেখিয়েছি। ত্বকে স্ক্রাবিং করবেন না ফেসিয়াল করার দু-তিন দিনের মধ্যে। এতে আপনার ত্বকের চামড়া আরও পাতলা হয়ে যেতে পারে।

রুদ্র থেকে দূরে থাকুনঃ

ফেসিয়াল করার দুই-তিন দিনের মধ্যে নিজেকে কিছুটা দূরে রাখুন। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি সব সময় ত্বকের শত্রু। কিন্তু যেহেতু আগেই বলেছি অনেক সময় ফেসিয়ালের পর ত্বক আরও বেশি নাজুক হয়ে যায় সেহেতু সূর্যের হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করা জরুরী। অন্যথায় আপনার ত্বকে সানবার্ন হতে পারে।

ত্বকের কিছুটা পরিচর্যা করুনঃ

ফেসিয়াল করার পরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মুখে শুধুমাত্র ঠাণ্ডা পানির ঝাপটাই যথেষ্ট। চাইলে ভালো ব্র্যান্ডের কোন ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম লাগাতে পারেন। এতে ত্বক কিছুটা নরম থাকবে।

আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন ফেসিয়াল করার পর কি করা উচিত আর কি করা উচিত নয়।

ফেসিয়াল করার পর সর্তকতা

ফেসিয়াল করার সময় অথবা ফেসিয়াল করার পর বেশকিছু সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। সতর্কতার নিচে আপনাদের সাথে শেয়ার করা হল।

  • ফেসিয়াল করার সময় বা মেসেজ করার সময় ত্বকে অতিরিক্ত প্রেসার দিবেন না। 
  • ফেসিয়ালের উপাদান মুখে লাগিয়ে রোদে বা ধুলাবালিতে বের হবেন না।
  • ফেসিয়ালের পর ২ থেকে ৩ দিন আপনার ত্বককে রোদ থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। 
  • ফেসিয়ালের পরেই ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। 
  • ভালো ফলাফল পেতে মাসে দুবার ফেসিয়াল করুন।
  • আবার বেশি ফেসিয়াল করা মানেও ভালো নয়। মাসে তিনবার এর অধিক ফেসিয়াল করলে উপকার এর পরিবর্তে আবার অপকার হতে পারে। 
  • আরো একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে আপনার ত্বক কোন ধরনের তার ওপর ভিত্তি করে ফেসিয়াল সিলেক্ট করুন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। 

শেষ কথাঃ | ফেসিয়াল করার পর কি করা উচিত | ফেসিয়াল করার পর করণীয়

প্রিয় পাঠক আমরা এই পোস্টের একদম শেষ দিকে চলে এসেছি। আমাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন যারা ফেসিয়াল করার পর করণীয় বা ফেসিয়াল করার পর কি করা উচিত সেটি সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত ছিলেন না। তাদের সুবিধার্থে এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করেছি ফেসিয়াল করার পর করণীয় বিষয়গুলো এবং ফেসিয়াল করার পর কি করা উচিত সেই সম্পর্কে।এছাড়াও এই পোস্টে আরো আলোচনা করেছি ফেসিয়াল করার নিয়ম এবং ফেসিয়াল করার পর সর্তকতা গুলো সম্পর্কে যেন আপনারা সতর্কতার সাথে ফেসিয়াল করতে পারেন এবং ফেসিয়াল করার পর করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন খুব সহজেই। 

আরো পড়ুনঃ টমেটো খাওয়ার ১১টি উপকারিতা

পোস্টটি পড়ে আপনার কাছে উপকারী  মনে হলে শেয়ার করুন আপনার বন্ধু-বান্ধব অথবা আত্মীয় স্বজনদের সাথে যেন তারাও ফেসিয়াল করার পর করণীয় বিষয়গুলি এবং ফেসিয়াল করার পর কি করা উচিত সেই সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন খুব সহজেই।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url