ই-কমার্স ব্যবসা কি - ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা

প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্ট টি পড়ে আপনারা জানতে পারবেন ই-কমার্স ব্যবসা কি, ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা সম্পর্কে।অনেকেই আছেন যারা ই কমার্স ব্যবসা করতে চান কিন্তু ই-কমার্স ব্যবসা কি, ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত নন তাদের সুবিধার্থে এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করব ই-কমার্স ব্যবসা কি, ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা সম্পর্কে। এছাড়াও পোস্ট টি পড়ে আরো জানতে পারবেন  ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম, ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন, ই-কমার্স ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স, ই-কমার্স ব্যবসার লাইসেন্স, ই-কমার্স বিল পরিশোধের পদ্ধতি কোনটি ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে। 

তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নিন, ই-কমার্স ব্যবসা কি, ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা, ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম, ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন, ই-কমার্স ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স, ই-কমার্স ব্যবসার লাইসেন্স, ই-কমার্স বিল পরিশোধের পদ্ধতি কোনটি ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে।  

পোস্ট সূচিপত্রঃ ই-কমার্স ব্যবসা কি - ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা

ই-কমার্স ব্যবসা কি?

ই-কমার্স কথাটির পূর্ণ অর্থ হলো “electronic commerce” বা “internet commerce“. ই-কমার্স বিজনেস এর কথা আমরা অনেকেই শুনেছি চলুন জেনে নেই ই-কমার্স ব্যবসা কি?

ই-কমার্স হলো এমন একটি বিজনেস প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি ইলেকট্রনিক সিস্টেম বা অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে আপনার পণ্য বা সেবা কাস্টমার এর কাছে পৌঁছে দিবেন এটিকে মূলত ই-কমার্স ব্যবসা বলতে পারি।

অনলাইন ইন্টারনেটের মাধ্যমে বেচা-কেনা করার ক্ষেত্রে buyer বা seller এর মধ্যে online payment হয়ে থাকে। ই-কমার্স বিজনেস এর অন্যতম একটি সুবিধা হল সময় ও ভৌগলিক সীমাবদ্ধতা দূর করে। এর ফলে যে কেউ তার বাসা থেকে পণ্য অর্ডার করে অল্প সময়ে বাসায় পণ্যটি পেয়ে যায় সহজেই। আশা করি বুঝতে পেরেছেন ই-কমার্স ব্যবসা কি। 

ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা

আমরা উপরে জানলাম ই-কমার্স ব্যবসা কি, চলুন জেনে নেই ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা সম্পর্কে। যে কোন ব্যবসার ক্ষেত্রে নীতিমালা দরকার ঠিক তেমনি ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা দরকার। ই-কমার্স যেহেতু একটি অনলাইন ব্যবসা তাই অনেক ই-কমার্স সাইট কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ইচ্ছামত তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল এর ফলে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ধরা পড়ে সরকারের কাছে। এরপরে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা প্রণয়ন করে ২০২১ সালে।২০২২ সালে এসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা বেশ কিছু পরিবর্তন আনে। নিচে ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা গুলো উল্লেখ করা হলো। 

  • একজন ক্রেতা কে কোন কিছু ক্রয় করার জন্য কোন ভাবে বাধ্য করা যাবে না। 
  • কোন কিছু ক্রয় বা বিক্রয় করার সময় যদি কোন গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন হয় আগে থেকে গ্রাহকের কাছে থেকে অনুমতি নিয়ে তারপর তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। এবং এই সংগৃহীত তথ্য অন্য কারো সাথে শেয়ার করা যাবে না। 
  • প্রতটি পন্য অনলাইন প্লাটফর্মে পাবলিশ করার সময় পন্যের যাবতীয় তথ্য দিয়ে দিতে হবে অর্থাৎ পন্যের যাবতীয় তথ্য এবং শর্তাবলি দিয়ে দিতে হবে। যেমন পণ্যের সঠিক দাম, সরবরাহ, ডেলিভারির সময়সীমা নির্ধারন এমনকি পন্য পরিবর্তনের নিয়ম দিয়ে দিতে হবে।
  • ডিজিটাল কমার্সের মাধ্যমে মাল্টি লেভেল ব্যবসা ও মার্কেটিং করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে। কোন ধরনের মাদক অথাবা নেশাদার পন্য বিক্রি করা যাবে না।
  • বিজনেস ওয়েবসাইট কোন বিশেষ সফটওয়্যার বা Cookies থাকলে ক্রেতাকে তা পূর্বেই অবহিত করতে হবে।
  • ঔষধ জাতিয় যাবতীয় পন্য বিক্রি করার জন্য ঔষধ প্রশাসনের কাছে থেকে আগে থেকে অনুমতি নিয়ে নিতে হবে নতুবা কেও ডিজিটাল মার্কেট প্লেসে কোন ধরনের ঔষধ বিক্রি করতে পারবে না।
  • যে সমস্ত পন্য অর্থের বিনিময়ে ব্যবহৃত হয় যেমন কোন ধরনের ভাউচার, গুগল প্লেকার্ড, ক্যাশ ভাউচার ইত্যাদি বিক্রির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমতি নিয়ে নিতে হবে নতুবা কেও এসব বিক্রি করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
  • এমনকি সাত দিনের মধ্যে প্রডাক্ট ডেলিভারি বা হস্তান্তর না করলে জরিমানা দিতে হবে। তাছাড়া ডিজিটাল মাধ্যমে কোন অর্থের ব্যবসা করতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হবে।
  • প্রতিটি ডিজিটাল ব্যবসায়ীকে লাইসেন্স প্রাপ্ত হতে হবে যেমন তাঁর থাকতে হবে, টিআইএন সার্টিফিকেট, ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট নিবন্ধন, পিআরএ, ইউবিআইডি ।
  • কোনো ধরণের অবৈধ পন্য বিক্রি করা যাবেনা এবং ডিজিটাল প্লাটফ্রম তৈরি করলে অবশ্যই রেজিস্টার করে নিতে হবে।

নতুন ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর আগে অবশ্যই নিচের PDF টি ডাউনলোড করে পড়ার অনুরোধ রইল। ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা PDF ডাউনলোড করুন। যে কেউ নতুন ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে চাইলে অবশ্যই ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা মেনে ব্যবসা শুরু করতে হবে। তাছাড়া বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের ২০২২ সালের নতুন নিয়ম অনুসারে ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা মেনে ব্যবসা শুরু না করলে ব্যবসাটি অবৈধ বলে গণ্য হবে। 

ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম

আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে চান কিন্তু ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত নন তাদের সুবিধার্থে এখন আলোচনা করব ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম সম্পর্কে। ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা মেনে চলা জরুরি যা আমরা উপরে আলোচনা করেছি। বেশকিছু ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম রয়েছে এরমধ্যে ই-কমার্স ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ, ই-টিন সার্টিফিকেট তৈরি, পন্যের তথ্য দেয়া, পণ্যের ডেলিভারি ব্যবস্থাসহ অনেক নিয়ম রয়েছে এগুলো নিচে আলোচনা করা হলো।

ই-টিন সার্টিফিকেট তৈরিঃ 

ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে ই-টিন সার্টিফিকেট তৈরি অত্যন্ত জরুরী। ই-টিন সার্টিফিকেটকে বলা হয় ট্যাক্স আইডেটিফিকেশন নাম্বার (Tax Identification Number) যেটি আপনি অনলাইন থেকেই নিজে নিজে তৈরি করে নিতে পারবেন। ই-টিন সার্টিফিকেট তৈরির মূল উদ্দেশ্য হলো আপনি আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট এ যে পরিমাণ পণ্য ক্রয় বা বিক্রয় করবেন আপনার উপার্জনের উপরে সরকারকে কিছু পরিমাণ ভ্যাট পরিশোধ করতে হয়। সরকারকে ভ্যাট পরিশোধ করলে আপনার ইনকাম টি বৈধ বলে বিবেচিত হবে। অন্যথায় আপনার প্রতিষ্ঠান এর উপর সরকার অভিযান চালিয়ে জেল ও জরিমানা করতে পারবে। 

আপনি যেহেতু ই-কমার্স ব্যবসা করতে চাচ্ছেন তাই আপনাকে অবশ্যই একটি ই-টিন সার্টিফিকেট তৈরি করে নিতে হবে এবং বছর শেষে আপনার টাকার হিসাব অনুযায়ী সরকারকে ভ্যাট প্রদান করতে হবে।অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা যৌথ ভাবে তাদের ব্যবসাকে পরিচালনা করে থাকে এবং যৌথ নিবন্ধন করে থাকে। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ইউনিক বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নাম্বার (UBID) বা পারসোনাল রিটেইল একাউন্ট (PRA) যেকোনো একটি গ্রহন করতে হবে।অনেকে আছেন যারা দেশের বাইরে থাকেন। দেশের বাইরে থেকে বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনা করতে চান তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশে একটি ব্যবসায়িক নিবন্ধন করতে হবে।

ই-কমার্স ব্যবসার জন্য ওয়েবসাইট তৈরিঃ

ই-কমার্স ব্যবসার জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। অনেকেই মনে করেন ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে ই-কমার্স ব্যবসা করবেন এটি আসলে সঠিক উপায় নয়। আপনার ওয়েবসাইটটি তৈরি পর আপনাকে বাংলাদেশ সরকার এর কাছে অনুমোদন নিতে হবে ই-কমার্স ব্যবসার জন্য।

মাল্টি লেভেল মার্কেটিং MLM নিষিদ্ধঃ

মাল্টিলেভেল মার্কেটিং একটি পিরামিড আকৃতির মার্কেটিং স্ট্রাটেজি। ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে MLM মার্কেটিং নেটওয়ার্ক তৈরি করে ব্যবসা পরিচালনা করা যাবেনা।

ঔষধ জাতীয় পণ্য বিক্রির জন্য লাইসেন্সঃ

আপনি যদি আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট এ ঔষধ জাতীয় পণ্য বা চিকিৎসা সেবা জাতীয় পণ্য বিক্রি করতে চান তাহলে অবশ্যই ঔষধ জাতীয় পণ্য বিক্রির জন্য আলাদাভাবে ঔষধ জাতীয় পন্যের লাইসেন্স গ্রহন করতে হবে। এই লাইসেন্স গ্রহন করার জন্য আপনাকে যেতে হবে ঔষধ প্রসাশনের কাছে আর যদি আপনি লাইসেন্স না করেই ব্যবসা শুরু করে দিতে চান সেটি হবে নিজের জন্য অনেক বড় একটি বোকামি ছাড়া কিছুই না।

ই-কমার্স নীতিমালার প্রথম ধাপে যদিও ঔষধ নিয়ে তেমন কোন প্রকার দাঁয় বদ্ধতার কথা বলা হয়নি কিন্তু দ্বিতীয় দফায় বলা হয়েছে কারণ ঔষধ যেহেতু মানুষের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত তাই আপনাকে অবশ্যই লাইসেন্স করতে হবে। আমাদের দেশে অনেক ভুয়া কোম্পানি আছে যারা কোন প্রকার লাইসেন্স ছাড়া ঔষধ উৎপাদন করে বিক্রি করছে। ঔষধ যেহেতু মানুষের জীবন বাঁচানোর একটি উপাদান তাই অবশ্যই ঔষধ জাতীয় পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে ওষুধ প্রশাসনের কাছে অনুমোদন নিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে অনলাইনে বিজনেস করার ১৫টি আইডিয়া সম্পর্কে জেনে নিন

বিস্ফোরক জাতীয় পন্য বিক্রির জন্য লাইসেন্সঃ

বিস্ফোরক জাতীয় পন্য বলতে বিভিন্ন ধরণের আতশ বাজি জাতীয় পন্যে বা গ্যাস সিলিন্ডার জাতীয় পণ্য বিক্রি করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে বিস্ফোরক অধিদপ্তর এর কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। আপনি বিস্ফোরক জাতীয় যে পণ্য বিক্রি করতে চান তার একটি লিস্ট তৈরি করে তারপর লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে।আপনি যদি লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা শুরু করেন এবং সেটি থেকে পরবর্তিতে যদি কোন প্রকার ক্ষতির কারণ হয় তাহলে আপনার জেল এবং জরিমানা দুটিই বহন করতে হবে।

মাদক বা নেশা জাতীয় পন্য নিষিদ্ধঃ

কোনভাবেই আপনার ই-কমার্স এর মাধ্যম ব্যবহার করে মাদক জাতীয় পন্য বিক্রি করা যাবেনা। কারণ বাংলাদেশের মাদকের বৈধ ব্যবহার কোন প্রকার লাইসেন্স দেয়া হয়না। 

পন্যের বিস্তারিত তথ্য উল্লেখঃ

ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপনি যখন আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট এ কোন পণ্য বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দিবেন তখন অবশ্যই পণ্যের বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করতে হবে একই সাথে যে পণ্য বিক্রি করতে চান তার ছবি আপলোড করতে হবে। বিস্তারিত তথ্যের মধ্যে হতে পারে পন্যের দাম, সরবরাহ, কত দিনের মধ্যে ডেলিভারি হবে, পণ্য রিটার্ন দেয়ার সুযোগ আছে কিনা, পণ্যের ওয়ারেন্টি বা গ্যারান্টি সমস্ত কিছু বিস্তারিতভাবে দিয়ে দিতে হবে।

আপনি যদি উপরে উল্লেখিত পণ্যের বিস্তারিত বিষয় গুলি উল্লেখ না করেন তাহলে অনেক সময় প্রশাসনের কাছে আপনার জবাবদিহি করতে হতে পারে।

ডিজিটাল ভাউচার বিক্রিঃ

বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল ভাউচার রয়েছে, যেমন গুগল প্লে কার্ড, নেটফ্লিক্স এর মতো ওয়েবসাইট এর সাবস্ক্রিপশন কার্ড, বিভিন্ন ব্র্যান্ড এর ভাউচার কার্ড এই সমস্ত ডিজিটাল কার্ড বিক্রির ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান নীতিমালা অনুসরণ করে অনুমোদন নিতে হবে।

গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে অনুমতিঃ 

কোন ই-কমার্স ওয়েবসাইট যদি চাই যে ভবিষ্যতে নিজের মার্কেটং করার জন্য গ্রাহকের তথ্য গুলোকে নিজের ডেটাবেজের মধ্যে সংগ্রহ করে রাখবেন তাহলে অবশ্যই সেই গ্রাহকের কাছে থেকে প্রথমেই অনুমতি নিয়ে নিতে হবে। 

আপনি যদি অবৈধ ভাবে কারো তথ্য সংগ্রহ করে রাখেন তাহলে সেই ব্যাক্তি আপনার বিরুদ্ধে মামালা করার মত ক্ষমতা রাখে। তাই আগে অনুমতি নিয়েনিন অথবা ট্রামস এন্ড কন্ডিশনে তথ্য সংগ্রহ করা হয় সেই বিষয় যুক্ত করেদিন।

পন্য ডেলিভারিঃ 

প্রতিটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান তাদের পন্য কত সময় পরে ডেলিভারি করবে এইরকম সময়সীমা আগে থেকেই নির্ধারণ করে দিতে হবে। অনেকেই পণ্য অর্ডার করার পর পণ্য আসতে বেশ কিছুদিন সময় লেগে যায় এর ফলে ভোক্তা হয়রানির শিকার হয়। আর তাই ভোক্তা যেন হয়রানির শিকার না হয় তাই ডেলিভারি করার সময়সীমা আগে থেকেই নির্ধারণ করে দিতে হবে। সময় মত একজন ভোক্তা পন্য হাতে না পেলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে সেই ভোক্তা মামলা দায়ের করার ক্ষমতা রাখে।

ই-কমার্স ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স | ই-কমার্স ব্যবসার লাইসেন্স

যে কোন ব্যবসার জন্য যেমন লাইসেন্স নিতে হবে তেমনি ই-কমার্স ব্যবসার জন্য ই-কমার্স ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে। ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ই-কমার্স ব্যবসার লাইসেন্স সংগ্রহ। ই-কমার্স ব্যবসার লাইসেন্স নেয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার ই-কমার্স ব্যবসার একটি নাম দিতে হবে এবং সেই নামেই আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ ই-কমার্স ব্যবসার প্লান-ই-কমার্স বিজনেস মডেল

আপনি যদি ই-কমার্স ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই নিজের ব্যবসা শুরু করেন তাহলে সেই ই-কমার্স সাইট টি অবৈধ বলে গণ্য হবে এবং ভবিষ্যতে এর জন্য আপনাকে জেল ও জরিমানা করা হবে।

তাই আপনি আপনার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রথমেই নিজের ব্যবসার জন্য একটি ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করে নিবেন। মনে রাখবেন একটি ট্রেড লাইসেন্স মানেই হচ্ছে আপনি একটি প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রি প্রাপ্ত মালিক।

ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন

আমরা এখন জেনে নেব ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন সম্পর্কে। অনেকেই আছেন যারা ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে চান কিন্তু কিভাবে শুরু করবেন বুঝতে পারছেন না তাদের সুবিধার্থে এখন ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন গুলো আলোচনা করব।

প্রতিষ্ঠানের নামকরণঃ 

ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন গুলোর মধ্যে প্রথম কাজ হলো ব্যবসা করার জন্য আপনার কোম্পানির একটি নাম দেয়া জরুরী। একজন ব্যক্তিকে চিনতে হলে যেমন তার নাম জানতে হয় ঠিক তেমনি একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কে মানুষের মধ্যে জানানোর জন্য অবশ্যই প্রতিষ্ঠান এর একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নাম দেয়া জরুরী। আপনার প্রতিষ্ঠান কি নাম দেবেন এটি ডিপেন্ড করবে আপনি কি ধরনের পণ্য ই-কমার্স সাইটে বিক্রি করতে চান তার উপর। আপনাকে এমন একটি নাম বেঁছে নিতে হবে যেন সেই নাম কেও একবার দেখলেই মনে রাখতে পারে। আর যেটির নাম মানুষের বেশী মনে থাকে সেটি গুগলে সার্চ করবে এটাই স্বাভাবিক। আপনার উচিৎ হবে প্রথমেই ভালো একটি নাম খুঁজে বের করে রাখা।

ওয়েবসাইট তৈরীঃ

আপনি যেহেতু ই-কমার্স ব্যবসা করবেন তাই আপনার বিজনেসটিকে অনেক অনেক মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে ওয়েবসাইট তৈরি জরুরি। আপনার বিজনেস কে দীর্ঘস্থায়ী করতে ওয়েবসাইট থাকার কোন বিকল্প নেই, এটি ব্যবসায় সফলতা পাওয়ার পূর্ব শর্ত। তবে ওয়েবসাইট লাগবে বলেই যে যেমন তেমন একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে ফেললেন আর সফলতা পেয়ে গেলেন বিষয়টা ঠিক এমন হয়। আপনার ই-কমার্স বিজনেস এর ওয়েবসাইট টি অবশ্যই হতে হবে সুন্দর ও সাবলীল। যাতে আপনার কাস্টমার এর জন্য ওয়েবসাইট এ এসে আপনার পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন একই সাথে আপনার আর কি কি পণ্য রয়েছে সেগুলো যেন জানতে পারে সেভাবেই ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে হবে। আপনি যদি নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন তাহলে ভাল আর যদি না পারেন তাহলে কোন আইটি কোম্পানি থেকে ওয়েবসাইট তৈরী করে নিতে হবে।

অনেক অনেক ওয়েব সাইট আছে যেগুলোতে প্রবেশ করলে দেখা যায় সেই ওয়েবসাইটটি ইউজার ফ্রেন্ডলি না অর্থাৎ যখন কেউ মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে তখন এই ওয়েবসাইট এর লেখা  ছোট ছোট দেখায় এবং জুম করে দেখতে হয়। এই বিষয়টি মাথায় রেখে রেস্পন্সিভ ওয়েবসাইট তৈরি করা উচিৎ যাতে একজন কাস্টমার মোবাইল, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ যেকোনো ডিভাইস দিয়ে সহজেই ওয়েবসাইট টি তে প্রবেশ করতে পারে। সুন্দর ও সাবলীল ওয়েবসাইট তৈরি করার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে ওয়েবসাইট টি তে কাস্টমার এর প্রয়োজনীয় বিষয় গুলি যেন সামনে থাকে। কোন তথ্য খুজতে যেন একজন কাস্টমারকে ভোগান্তি পোহাতে না হয়। একজন কাস্টমার যেনো খুব সহজেই ওয়েবসাইট থেকে তার পছন্দসই পণ্য টি অর্ডার করতে পারে সে বিষয় টি ও লক্ষ্য রাখতে হবে।

আইনি কার্যাবলী পূর্ণ করাঃ

আপনার ই-কমার্স ব্যবসার জন্য অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স এবং ব্যবসায়িক বৈধতা সার্টিফিকেট লাগবে। অনেক কাজের ক্ষেত্রে আপনার এটা লাগবে যেমন ধরুন আপনি অনলাইনে পেমেন্ট নিতে যাবেন তার জন্য এটা লাগবে। তা ছাড়াও আরো অনেক কাজের ক্ষেত্রে আপনার ব্যবসার প্রমাণ দিতে এসব কাগজপত্রগুলো অবশ্যই লাগবে। 

পন্য নির্বাচন করাঃ 

ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে পণ্য নির্বাচন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দেখুন ব্যবসা করার জন্য আপনাকে সঠিক পন্যটি বেঁছে নিতে হবে। বর্তমানে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে কোন পন্য গুলো মানুষ বেশী ক্রয় করে থাকে সেটি অবশ্যই লক্ষ্য করতে হবে।

ই-কমার্স বিজনেস শুরু করার আগে প্ল্যান করে নিতে হবে কোন পণ্য টির মার্কেটে অনেকে চাহিদা রয়েছে এবং প্রতিযোগিতা তুলনামূলক ভাবে কম। যে পণ্যের ডিমান্ড অত্যাধিক কিন্তু তুলনামূলক প্রতিযোগিতা কম এমন পণ্য আপনি বাছাই করতে পারেন। এতে তুলনামূলক কম পরিশ্রমে সফলতা আসে।

প্রোডাক্ট সোর্স খুঁজে বের করাঃ 

আপনি যে ধরনের পণ্য আপনার ওয়েবসাইটে বিক্রি করতে চান সেটি সিলেক্ট করার পর আপনি প্রোডাক্ট কোথায় থেকে সংগ্রহ করবেন সেই বিষয়টার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে এছাড়াও খেয়াল রাখতে হবে পণ্যের দাম কোন জায়গায় অপেক্ষাকৃত কম।কেননা আপনি যত কম খরচে আপনার পণ্যগুলো সংগ্রহ করতে পারবেন আপনি তত বেশি দামে পণ্যগুলো বেচতে পারবেন। আপনাকে যদি প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বের উন্নত সব ই কমার্স প্রতিষ্ঠান সাথে তালে তাল মিলিয়ে টিকে থাকতে হয় তাহলে অবশ্যই প্রোডাক্ট সংগ্রহের বিষয়টাতে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। 

ডেলিভারি ব্যবস্থা ঠিক রাখাঃ 

ই-কমার্স ব্যবসায় সফলতা অর্জন করার জন্য সঠিক সময়ে পন্য ডেলিভারি করা অনেক গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়। সঠিক সময়ে পন্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিলে আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর প্রতিটি গ্রাহকের আস্থা বৃদ্ধি পাবে।গ্রাহকদের আস্থা বৃদ্ধি পেলে ব্যবসার প্রসার অনেক বৃদ্ধি পাবে। মনে রাখবেন একটি ব্যবসা উন্নতি করতে হলে গ্রাহকের বিশ্বাস অর্জন করা খুবই প্রয়োজনীয়।

উপরিউক্ত ধাপগুলো ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার পূর্বে অবশ্যই উপরিউক্ত গাইডলাইন গুলো অনুসরণ করা উচিত।

ই-কমার্স বিল পরিশোধের পদ্ধতি কোনটি

এখন আমরা জেনে নেব ই-কমার্স বিল পরিশোধের পদ্ধতি কোনটি নির্বাচন করবেন সেই সম্পর্কে।আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে যখন একজন কাস্টোমার পন্য কিনবে তখন বিভিন্ন ধরনের পেমেন্ট ব্যবস্থা আপনাকে করে দিতে হবে একই সাথে পেমেন্ট যেন সুরক্ষিত থাকে এমন পেমেন্ট সিস্টেম সিলেক্ট করতে হবে। বর্তমানে অনেক অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম রয়েছে যেমন বিকাশ, রকেট, নগদ এবং ব্যাংক সহ আরো অনেক সিস্টেম। এদের মধ্য থেকে আপনাকে একাধিক অপশন সিলেক্ট করতে হবে যেটার মাধ্যমে কাস্টমার খুব সহজে আপনার ওয়েবসাইট থেকে পণ্য কেনার মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারে। এছাড়াও ক্যাশ অন ডেলিভারি ব্যবস্থাও করা যেতে পারে।

শেষ কথাঃ | ই-কমার্স ব্যবসা কি | ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা

প্রিয় পাঠক আমরা এই পোস্টের একদম শেষ দিকে চলে এসেছি। আপনাদের সুবিধার্থে এই পোস্টে ই-কমার্স ব্যবসা কি, ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা সহ ই-কমার্স ব্যবসার অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো যেমন, ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম, ই-কমার্স ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স, ই-কমার্স ব্যবসার লাইসেন্স, ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন, ই-কমার্স বিল পরিশোধের পদ্ধতি কোনটি ইত্যাদি বিষয়গুলো বিস্তারিত উল্লেখ করেছি। যারা নতুন কমার্স ব্যবসা শুরু করতে চান আশা করি তাদের জন্য এই পোস্টটি উপকারী হবে। 

আরো পড়ুনঃ 10টি সেরা ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপ সম্পর্কে দেখে নিন

পোস্টটি পড়ে আপনার কাছে উপকারী মনে হলে শেয়ার করুন আপনার বন্ধু বান্ধবদের সাথে যেন তারা ই-কমার্স ব্যবসা কি, ই-কমার্স ব্যবসার নীতিমালা সহ আরো অন্যান্য বিষয়গুলি জেনে নিতে পারেন খুব সহজেই।১৬৮২১ 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url